আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নিয়ে যেসব অভিযোগ রয়েছে, সেগুলো পর্যালোচনা ও ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য একটি কমিশন গঠন করেছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এই তিন নির্বাচনে নানা কৌশলে জনগণের ভোটাধিকার খর্ব করে একটি বিশেষ দলকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এসব অভিযোগ পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে করণীয় নির্ধারণ করবে যে কমিশন, সেটি ৫ সদস্যবিশিষ্ট।
হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামীম হাসনাইনকে সভাপতি করে গঠিত কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা হলেন— সরকারের সাবেক গ্রেড-১ কর্মকর্তা শামীম আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক (সুপণ), ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরাম হোসাইন ও নির্বাচন বিশ্লেষক ড. মো. আব্দুল আলীম।
কমিশনের কার্যপরিধি হলো—
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক, নাগরিক সংগঠন, তদারকি প্রতিষ্ঠান এবং গণমাধ্যমে উত্থাপিত অভিযোগ বিশ্লেষণ; নির্বাচনে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এবং এর নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত পর্যালোচনা; তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের ভূমিকা ও রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি সংক্রান্ত অভিযোগ বিশ্লেষণ; নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার ভূমিকা পর্যালোচনা; আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা বিশ্লেষণ; তৎকালীন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ যাচাই ও অনুসন্ধান; নির্বাচন অনিয়মের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ; ভবিষ্যতে সুষ্ঠু ও মানসম্পন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সুপারিশ প্রণয়ন; প্রয়োজনে দলিল দস্তাবেজ তলব ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার ক্ষমতা প্রয়োগ।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, কমিশন দেশের যেকোনো স্থান পরিদর্শন, যেকোনো সরকারি দপ্তরের নথি তলব ও সন্দেহভাজন যেকোনো ব্যক্তিকে তলব ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। ‘দ্য কমিশনস অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ অনুসারে কমিশনকে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে